কিডনি রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার

বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৭৫০ মিলিয়নের বেশি মানুষ কোন না কোন ধরনের কিডনি রোগে ভুগছেন। যা প্রতি বছর বেড়ে চলেছে। প্রতিবছর প্রায় 2 মিলিয়ন এর ও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়ে মারা যায় আর এর প্রধান কারণ আমাদের ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে খারাপ প্রভাব ফেলে বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাসের ভুল ত্রুটি এই অঙ্গটির ভীষণ ক্ষতি করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন একবার এই অঙ্গের ক্ষতি হলে পূর্বাবস্থায় ফেরানো যায় না তখন কেবল রোগ টিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তাই বুঝতেই পারছেন বিষয়টা কতটা জটিল। বিশেষজ্ঞদের ভাষায় কিছু খাবার দাবারের জন্য কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এরথেকে কিডনিতে পাথর ক্রনিক বা কিডনি ডিজিস পলিসিক সমস্যা দেখা দেয়। তবে অন্যদিকে পুষ্টিবিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত ও নিত্যনতুন খাদ্যের বিভিন্ন দিক উন্মোচন করে চলেছেন। কিডনি সুরক্ষায় এমন কিছু খাবার আছে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এসব খাবারের মাধ্যমে আমাদের কিডনি সুস্থ রাখতে পারি।

কিডনি রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার

আজকের আর্টিকেলটিতে কিডনি রোগের লক্ষণ কোন কোন খাবারে কিডনি ডিজিজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ কোন খাবার কিডনি গুলো আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে এবং কোন খাবারগুলো কিডনি ডিজিজ থেকে আপনাকে দূরে রাখবে। এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে বুঝিয়ে বলব তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়বেন। কিডনির সমস্যা হলে কিছু প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয় যেমন সারা শরীরে ব্যথা হওয়া। ত্বকে রেস বের হওয়া। প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া। দেহে ফোলা ভাব। পেছনের দিকে ব্যথা। ক্লান্তি গ্রাস করা। বেশি ঠান্ডা লাগা। কম খিদে পাওয়া।তবে অনেক সময় এই রোগের তেমন কোন উপসর্গের দেখা মেলে না। তখনই আসল সমস্যার শুরু হয় এগুলো হলো কিডনি সমস্যার লক্ষণ। তবে কিছু কিছু খাবার খেলে কিডনির ঝুঁকি বাড়ে। সেগুলো সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে।

যেমন অ্যালকোহল। অ্যালকোহলে থাকা ক্ষতিকারক পদার্থ কে শরীরের বাইরে বের করে দিতে গিয়ে একসময় কিডনি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তবে এই সমস্যায় একদিনে হয় না দীর্ঘদিন ধরে অ্যালকোহল পান করলে এই সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। লবণ দেহের জন্য উপকারী হলেও প্রতিদিন কখনো একট চামচের বেশি লবণ খাবেন না লবনে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে শরীরে বেশি পরিমাণ সোডিয়াম থাকলে ত্বরলের মাত্রা বেড়ে যায়। আর এই তরলের অধিক্য সামলাতে গিয়ে কিডনির সমস্যা বাড়ে।পানির পরিবর্তে কখন অ্যালকোহল বা কোমল পানীয় পান করা উচিত নয়। কারণ এটি কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়াও অক্সনেন জাতীয় খাবার যেমন সিম করোলা ছোলা বুট এগুলো অত্যাধিক পরিমাণে খাবেন না। এগুলো আপনার কিডনির জন্য ক্ষতিকর। যদি আপনি বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তাহলে এই সকল খাবার খুব বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেললে ভেতরে ভেতরে আপনার কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এবং কিডনিতে পাথর জমে যেতে পারে। বাদাম দেহের জন্য উপকারী কিন্তু সবসময় বাদাম ভিজিয়ে খেতে হবে অন্ততপক্ষে 6 থেকে 7 ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর। বাদাম খাওয়ার নির্দিষ্ট মাপ রয়েছে। বাদামে অনেক ভালো ফাইবার এবং গুনাগুন থাকাতে অনেকে প্রচুর পরিমাণে বাদাম খেয়ে ফেলেন। কিন্তু কাঠবাদাম কাজুবাদাম 4/5 টি এর বেশি নয়। আর চিনাবাদাম 15 থেকে 20 টির বেশি নয়। অতিরিক্ত কফি খাবেন না এতে ও কিডনির ক্ষতি হয়। দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখা কিন্তু আপনার কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এইযে গ্যাস্টিকের জন্য ঘন ঘন ওমিপ্রাজল ওষুধ খাচ্ছেন এটি আপনার কিডনিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আর হালকা ঠান্ডা লাগলে যেকোনো সমস্যায় শরীর ব্যথা হলে অনেকেই নাপা খাওয়াটাকে একটা ফ্যাশন বানিয়ে ফেলেছেন। 


কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে প্যারাসিটামল নাপা বা এইছ জাতীয় খাবার গুলো খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া ঠিক নয়। একান্ত আপনি অসুস্থ হয়ে গেলে তখন মাঝে মধ্যে খাবেন তার মানে এই নয় ছোটখাটো ব্যথা-তেওয়া আপনি নাপা খেয়ে ফেলবেন। এগুলোর মাধ্যমে আপনার কিডনির ক্ষতি হচ্ছে এবার চলুন জেনে নেই কিডনি ভালো রাখতে যে দশটি খাবার আপনি খাবেন।

১/ নাম্বারে হচ্ছে প্রতিদিনই এক থেকে দুইটি মাঝারি আকৃতির কাঁচা পেঁয়াজ খেতে পারেন পেঁয়াজের প্রচুর পরিমাণে ফ্লাই বুনোওয়েছ রয়েছে যা রক্তের চর্বি দূর করে এবং কিডনি সুস্থ রাখে।

২/ নাম্বারে হল কাঁচা রসুন আমার সঙ্গে এন্টি ক্লোরিন গুন দেহকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি কিডনিকেও সুস্থ রাখে। সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে হার্ট ও কিডনি ভালো থাকে। তাই রোজ সকালে এক থেকে দুই কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়ার চেষ্টা করুন।

৩/ নাম্বারে আছে আপেল প্রচলিত আছে প্রতিদিন একটি আপেল খানা ডাক্তারকে দূরে রাখুন কথাটি কিডনির ক্ষেত্রেও সত্য। আফেলে রয়েছে ইনফ্লেমেটরি যা আপনার কিডনিকে পরিশোধন করে,

৪/ নাম্বারে হলো ডিমের সাদা অংশ ডিমের সাদা অংশ কিডনির জন্য খুবই ভালো। প্রতিদিন একটি অথবা দুটি ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন এটি উচ্চমানের কিডনি বান্ধব। প্রোটিনের উৎস সরবরাহ করে। ডায়ালিসিস চিকিৎসারত রোগীরাও ডিমের সাদা অংশ খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

৫/ নম্বরে আছে দারুচিনি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে দারুচিনি কিডনি ফাংশন এর উন্নতি ঘটায়। প্রতিদিন এক ইঞ্চি পরিমানে দারুচিনি খেলে আপনার কিডনি ভালো থাকবে।

৬/ নাম্বারে আছে হলুদ। হলুদ কিডনি পরিষ্কার রাখতে দারুন কার্যকরী এতে থাকা কারো কারপোমিন কিডনির পাথর জমা দূর করে। তাই এক গ্লাস পানির সাথে অল্প পরিমাণে হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন।

৭/ নম্বরে রয়েছে মাছ। সব সময় চেষ্টা করবেন আপনি যে দেশে আছেন সে দেশের টাটকা তাজা মাছ খাওয়ার জন্য বরফ দেয়া অথবা বেশি দিন ফ্রিজে থাকা মাছ গুলো কখনোই দেহের জন্য ভালো নয়। আবার অনেকেই চাষের মাছ খেয়ে ফেলে চাষ করার এমন কিছু পদ্ধতি রয়েছে যে পদ্ধতির ফলে মাছ বিষাক্ত হয়ে যায় এই বিষয়টা খেয়াল রাখবেন। অর্গানিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

৮/ নাম্বারে রয়েছে আনারস। আনারস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। এতে উচ্চমাত্রায় ফাইবার থাকে যা কিডনি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক এছাড়াও এটি ম্যাঙ্গানিজ ভিটামিন সমৃদ্ধ হওয়ায় প্রদাহ জনিত সমস্যা হ্রাস করতেও সহায়তা করে।

৯/ নম্বরে রয়েছে করা টাকা করাতে পটাশিয়াম রয়েছে যা কিডনির জন্য উপকারী। আপনার কিডনির ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে প্রতিদিন একটি কলা খেতে পারেন । 

সর্বশেষ

১০/ নম্বরে রয়েছে পানি অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। দিনে কমপক্ষে তিন লিটার পানি পান করার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন আজ কিডনি সুস্থ আছে আপনি পানি পান করছেন না। তো কাল আপনার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে তখন কিন্তু আপনি দৈনিক তিন লিটার পানি পান করতে পারবেন না। কারণ কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুব অল্প পরিমাণে পানি পান করতে হয় তাই ভালো থাকতেই কিডনি সুস্থ রাখতে বেশি পরিমাণ পানি পান করুন। আর্টিকেলটি ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার দিতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

Post a Comment

0 Comments